
তাহলে একটু দাঁড়ান! লং টার্ম রিলেশনশিপে যাওয়ার আগে যদি আপনার মনে 'অনেকদিন একা থাকা হল, আর ভালো লাগছে না... ধুস, প্রেমটা করতেই হবে', 'বয়স বাড়ছে, বিয়েটা সেরেই ফেলি', 'সিঙ্গল থেকে থেকে ক্লান্ত আমি' বা 'ভালোর খোঁজে বসে থেকে যদি আর ভালো না পাওয়া যায়; তার চেয়ে বিয়ে করে নিই বাবা'- এমন সব প্রশ্ন বা বক্তব্য ঘোরে, তবে সাবধান! জেনে রাখুন, আপনি যতই বিয়ের জন্য বা পাকাপাকি সম্পর্কে ঝাঁপ দেয়ার জন্য উদগ্রীব হয়ে পড়ুন না কেন, এই সম্পর্ক আপনার জন্য সঠিক না-ও হতে পারে! হয়তো ভুল কারণে গাঢ় সম্পর্কে শান্তি খুঁজছেন আপনি, যার ফলে পরবর্তীকালে তিক্ততা বাড়ার সম্ভাবনা থাকছে অনেকটাই।
এমন মনোভাব নিয়ে থাকলে, প্লিজ... বেরিয়ে আসুন সম্পর্কটি থেকে, 'তাকে' মনের মতো নারীকে খুঁজে পেতে দিন যিনি 'তাকে' পেয়ে সত্যিই আপ্লুত হবেন। আর আপনিও না হয় দিন কয়েক অপেক্ষা করে নিন আরও, মনের পুরুষটিকে খুঁজে পাওয়ার জন্য!
তবে হ্যাঁ; যদি প্রেমে পড়ার আগে বা পরে আপনার মাথায়, 'মানুষ হিসেবে ওকে আমি বেশ ভালোবাসি, শ্রদ্ধা করি', 'ওর সঙ্গে থাকলে আমি নিজেকে চিনতে পারি' অথবা 'আড়ালেও আমাদের কাটানো সময়ের কথা ভেবে আমি হাসি'- এমন সব কথা বিড়বিড় করে উঠে আসে, তাহলে 'তাকে' ধরে রাখুন! আপনি এক্কেবারে ফিট, এই সম্পর্কের জন্য। কিন্তু আবারও বলছি, এটুকু হিসেব-নিকেশ কষেই ছাদনাতলায় দৌড়াবেন না। তার আগে কী করা উচিৎ? প্রেমের মানুষটিকে যদি বেশ ভালোভাবেই চিনে নিয়ে থাকেন, তবে নিজেরই মনে মনে উত্তর দিয়ে দিন এই প্রশ্নগুলির। প্রশ্নের উত্তর থেকেই সিদ্ধান্ত তৈরি হতে সময় লাগবে না।
১. আপনার কি ভালো লাগে, তিনি যেভাবে আপনার সঙ্গে ব্যবহার করেন?
২. তার জীবনে কি আপনি প্রায়োরিটি লিস্টে আছেন?
৩. তিনি কি জুতো সেলাই থেকে চণ্ডীপাঠ পর্যন্ত সব ব্যাপারেই আপনাকে যথেষ্ট সম্মান করেন?
৪. ওর সঙ্গে থাকলে কি আপনি নিশ্চিন্ত থাকেন?
৫. আপনি মানুষটি যেমন, সেটাকে কি তিনি বিনা দ্বিধায় মেনে নেন?
৬. কঠিন সমস্যার সামনে পড়লে আপনি কি সব কিছু ওর সঙ্গে শেয়ার করতে পারেন?
৭. আপনার জীবনে কোনও ভালো ঘটনা ঘটলে কি তিনি খুশি হন?
৮. আপনিও কি পছন্দের মানুষটিকে ওর স্বভাব যেমন, তেমনটা নিয়েই ভালোবাসেন?
৯. ওর সঙ্গে থাকার সময় বা না থাকার সময়, আপনি কি নিজেকে যথেষ্ট সময় দিতে পারেন?
১০. ওর সঙ্গে থাকলে কি আপনি যতটা ইচ্ছে হইচই করতে পারেন?
১১. আপনারা কি একে অপরের পরিবারকে ভালোবাসেন?
১২. ওর জীবনের সব খুঁটিনাটিতে কি আপনার ভূমিকা আর মতামত রেখেছেন উনি?
১৩. আপনারা কি একে অপরকে সম্মানের চোখে দেখেন?
১৫. পরস্পরকে নিয়েই আপনারা সুখী থাকতে পারবেন তো? মাঝখানে অন্য কেউ নিশ্চয়ই আসবেন না? ১৬. আপনারা সত্যি করে পরস্পরের কতটা বন্ধু?
১৭. আপনারা কি একে অপরের সঙ্গ উপভোগ করেন?
১৮. প্রতিবার দেখা হলেই কি আপনাদের মধ্যেকার প্রেম আরও দৃঢ় হয়?
১৯.আপনারা কি একে অপরের জীবনকে পজিটিভ দিকে নিয়ে যেতে সাহায্য করেন?
২০. আপনারা কি একসঙ্গে বার্ধক্যে পা ফেলার কথা ভাবতে পারেন?
ব্যস, এই প্রশ্নগুলোর বেশিরভাগ বা সবকটাই যদি হ্যাঁ হয়, তবে বুঝে নিন ভাগ্য আপনাদের সবুজ সঙ্কেত দিচ্ছে। নচেৎ, ভালোবাসার ঘুঁড়ি ভো-কাট্টা হতে চলেছে, সামলান নিজেকে! মনোবিদরাও বলছেন সেই কথাই। 'আসলে এগুলো সবকটাই মনস্তাত্ত্বিক প্রশ্ন। প্রশ্নগুলো তৈরিই করা হয় এমনভাবে, যাতে করে উত্তরের মধ্যে দিয়ে নিজের এবং অপরের মন চিনে নেওয়া যায়।
তা বলে, এখন কোনো সমস্যা না-থাকলে পরে যে তা আসবে না- সেটাও কিন্তু হলফ করে বলা যায় না। একই সঙ্গে বলি, পরে দুঃখ পাব ভেবে নিজেকে একা করে রাখাটাও কোনো কাজের কথা নয়। তাই একটু বুঝেসুঝে এগিয়ে যান' জানাচ্ছেন মনোবিদরা। আপনি তাহলে কী ঠিক করলেন, বলুন তো?
