ছুটছে নগর। তার সঙ্গে প্রতিনিয়ত ছুটছেন আপনিও। এর মধ্যেই যে কখন শরীরে বাসা
করে নিয়েছে ডায়াবেটিস, তা হয়তো টেরও পাননি। কোনো শারীরিক উপসর্গে যখন টের
পেলেন, তখন যে একেবারে মাথায় হাত। তবে এতে যে খুব বেশি দুশ্চিন্তাগ্রস্ত
হতে হবে, তা কিন্তু নয়। দীর্ঘদিনের পরিচালিত জীবনযাপনকেই সাজিয়ে নিন একটু
ভিন্নভাবে। অনিয়মগুলোকে ভেঙে নিয়ম মোতাবেক পথচলা শুরু করে দিন। এ ক্ষেত্রে
খাবার নিয়ন্ত্রণ কিংবা প্রতিদিনের হাঁটার পাশাপাশি আপনার বন্ধু হতে পারে
যোগব্যায়ামও। বাংলাদেশ ইয়োগা অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মো. হারুন জানালেন এ
রোগে যোগব্যায়ামের উপকারিতার কথা। তিনি ডায়াবেটিসের রোগীদের ক্ষেত্রে
যোগব্যায়ামের ভুজঙ্গাসন, নওক-আসন, জানুশিরাসন ও ভাস্ত্রিকা প্রাণায়াম—এ
চারটি আসনের চর্চা করার পরামর্শ দেন।
মো. হারুন বলেন, ‘যোগব্যায়ামের কিছু আসন, প্রাণায়াম ও মুদ্রা রয়েছে, যেগুলো অভ্যাসের ফলে আমাদের শরীরে ইনসুলিন নিঃসরণ সহজ হয়, যা ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে বিশেষ ভূমিকা পালন করে। এ ছাড়া যোগব্যায়ামের চর্চার মাধ্যমে আমাদের রক্তের ভেতর যে শর্করা থাকে, তা হ্রাস পায়। এটিও ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে। যোগব্যায়ামচর্চার মাধ্যমে শরীরের অতিরিক্ত ওজন কমানো সম্ভব। পাশাপাশি যোগব্যায়ামচর্চার কারণে ডায়াবেটিসের রোগীর মানসিক চাপও হ্রাস পায়।’
ভাস্ত্রিকা প্রাণায়াম
ছবির মতো পদ্মাসনে বসুন। ধীরে ধীরে নিঃশ্বাস নিতে নিতে পেট যতটুকু সম্ভব সামনের দিকে বা শরীরের বাইরের দিকে বড় করুন। এবার দ্রুত নিঃশ্বাস ছাড়তে ছাড়তে পেট যতটুকু সম্ভব শরীরের ভেতরের দিকে নিয়ে আসুন। এভাবে ২০ থেকে ৪০ বার করুন। এটা করার সময় সম্পূর্ণ পেট থেকে শক্তি দিয়ে পেট সামনে এবং ভেতরে নিতে হবে। শবাসনে বিশ্রাম নিন। এভাবে সারা দিনে পাঁচ থেকে ছয়বার করুন।
আসন-ভুজঙ্গাসন
উপুড় হয়ে শুয়ে পড়ুন। দুই পা জোড়া করুন। এবার দুই হাত দুই কাঁধের পাশে রাখুন। এ সময় নাক ও কপাল মাটিতে স্পর্শ করা থাকবে। এবার নিঃশ্বাস নিতে নিতে বুক থেকে ওপরের অংশ ৪৫ ডিগ্রি কোনাকুনি তুলুন। নিঃশ্বাস-প্রশ্বাস স্বাভাবিক রেখে এ অবস্থায় ২০ থেকে ৩০ সেকেন্ড অবস্থান করুন। এবার নিঃশ্বাস-প্রশ্বাস ছাড়তে ছাড়তে ধীরে ধীরে নিচে নেমে যান। এবার শবাসনে বিশ্রাম নিন। এভাবে তিনবার করুন।
জানুশিরাসন
দুই পা সোজা করে বসুন। এবার ডান পা সোজা রেখে বাঁ পা হাঁটুতে ভাঁজ করে শরীরের ভেতরের দিকে নিয়ে আসুন। দুই হাত শরীরের দুই পাশ দিয়ে নিঃশ্বাস নিতে নিতে মাথার ওপর তুলুন। এরপর নিঃশ্বাস ছাড়তে ছাড়তে কোমরের ওপরের অংশ ধীরে যতটুকু সম্ভব সামনের দিকে নামান। দুই হাত দিয়ে এ সময় ডান পায়ের গোড়ালি চেপে ধরতে এবং নাক ও কপাল হাঁটুতে লাগাতে চেষ্টা করুন। নিঃশ্বাস-প্রশ্বাস স্বাভাবিক রেখে এ অবস্থায় কমপক্ষে ১০ সেকেন্ড স্থির থাকুন। এবার নিঃশ্বাস নিতে নিতে ধীরে ধীরে আগের মতো সোজা ওপরে উঠে পড়ুন। দুই হাত শরীরের দুই পাশ দিয়ে নিঃশ্বাস ছাড়তে ছাড়তে ধীরে ধীরে নামিয়ে আনুন। এবার বাঁ পা সোজা করে ফেলুন। একইভাবে বিপরীত দিকে করুন। এবার শবাসনে বিশ্রাম নিন। এভাবে পরপর তিনবার করুন।
নওক-আসন
চিত হয়ে শুয়ে পড়ুন। দুই পা জোড়া করে দুই হাত শরীরের সঙ্গে লাগান। নিঃশ্বাস ছাড়তে ছাড়তে কোমর মাটিতে রেখে শরীরের বাকি অংশ (ছবির মতো) তুলে ফেলুন। নিঃশ্বাস স্বাভাবিক রেখে এ অবস্থায় কমপক্ষে ১০ সেকেন্ড অবস্থান করুন। এবার নিঃশ্বাস নিতে নিতে ধীরে ধীরে নেমে যান। শবাসনে বিশ্রাম নিন। একইভাবে তিনবার করুন।
মনে রাখবেন
ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে আপনাকে একটি সুশৃঙ্খল জীবনধারা পরিচালনা করতে হবে। সঠিক ঘুম, কাজ, খাবার, ব্যায়াম, প্রিয়জনের সঙ্গে আড্ডা, কায়িক পরিশ্রম—সবকিছুতে যেন থাকে শৃঙ্খলা। খাবারের ক্ষেত্রে অবশ্যই উপযুক্ত ও পরিমিত খাদ্য ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে আপনাকে একটি সুশৃঙ্খল জীবনধারা পরিচালনা করতে হবে। সঠিক ঘুম, কাজ, খাবার, ব্যায়াম, প্রিয়জনের সঙ্গে আড্ডা, কায়িক পরিশ্রম—সবকিছুতে যেন থাকে শৃঙ্খলা। খাবারের ক্ষেত্রে অবশ্যই উপযুক্ত ও পরিমিত খাদ্য গ্রহণ করাও জরুরি। আর জীবনের অহেতুক জটিলতা পরিহার করুন।
লক্ষ করুন
নিয়মিত ব্যায়াম করুন
প্রতিদিন সকাল বা বিকেলে ৩০ মিনিট সময় ব্যায়ামের জন্য রেখে দিন।
কোনো কিছু খাওয়ার পর অর্থাৎ ভরা পেটে কখনোই যোগব্যায়ামের চর্চা করবেন না।
ব্যায়ামের সময় খুব আঁটসাঁট বা খুব ঢিলেঢালা পোশাক পরিহার করুন। আরামদায়ক পোশাক বেছে নিন।
যেকোনো ব্যায়াম শুরু করার আগে আপনার শারীরিক কোনো ত্রুটি বা অসুখ থাকলে অবশ্যই চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করে নিন।
মডেল: ফারিয়া ছবি: নকশা কৃতজ্ঞতা: বাংলাদেশ ইয়োগা অ্যাসোসিয়েশন
মো. হারুন বলেন, ‘যোগব্যায়ামের কিছু আসন, প্রাণায়াম ও মুদ্রা রয়েছে, যেগুলো অভ্যাসের ফলে আমাদের শরীরে ইনসুলিন নিঃসরণ সহজ হয়, যা ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে বিশেষ ভূমিকা পালন করে। এ ছাড়া যোগব্যায়ামের চর্চার মাধ্যমে আমাদের রক্তের ভেতর যে শর্করা থাকে, তা হ্রাস পায়। এটিও ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে। যোগব্যায়ামচর্চার মাধ্যমে শরীরের অতিরিক্ত ওজন কমানো সম্ভব। পাশাপাশি যোগব্যায়ামচর্চার কারণে ডায়াবেটিসের রোগীর মানসিক চাপও হ্রাস পায়।’
ভাস্ত্রিকা প্রাণায়াম
ছবির মতো পদ্মাসনে বসুন। ধীরে ধীরে নিঃশ্বাস নিতে নিতে পেট যতটুকু সম্ভব সামনের দিকে বা শরীরের বাইরের দিকে বড় করুন। এবার দ্রুত নিঃশ্বাস ছাড়তে ছাড়তে পেট যতটুকু সম্ভব শরীরের ভেতরের দিকে নিয়ে আসুন। এভাবে ২০ থেকে ৪০ বার করুন। এটা করার সময় সম্পূর্ণ পেট থেকে শক্তি দিয়ে পেট সামনে এবং ভেতরে নিতে হবে। শবাসনে বিশ্রাম নিন। এভাবে সারা দিনে পাঁচ থেকে ছয়বার করুন।
আসন-ভুজঙ্গাসন
উপুড় হয়ে শুয়ে পড়ুন। দুই পা জোড়া করুন। এবার দুই হাত দুই কাঁধের পাশে রাখুন। এ সময় নাক ও কপাল মাটিতে স্পর্শ করা থাকবে। এবার নিঃশ্বাস নিতে নিতে বুক থেকে ওপরের অংশ ৪৫ ডিগ্রি কোনাকুনি তুলুন। নিঃশ্বাস-প্রশ্বাস স্বাভাবিক রেখে এ অবস্থায় ২০ থেকে ৩০ সেকেন্ড অবস্থান করুন। এবার নিঃশ্বাস-প্রশ্বাস ছাড়তে ছাড়তে ধীরে ধীরে নিচে নেমে যান। এবার শবাসনে বিশ্রাম নিন। এভাবে তিনবার করুন।
জানুশিরাসন
দুই পা সোজা করে বসুন। এবার ডান পা সোজা রেখে বাঁ পা হাঁটুতে ভাঁজ করে শরীরের ভেতরের দিকে নিয়ে আসুন। দুই হাত শরীরের দুই পাশ দিয়ে নিঃশ্বাস নিতে নিতে মাথার ওপর তুলুন। এরপর নিঃশ্বাস ছাড়তে ছাড়তে কোমরের ওপরের অংশ ধীরে যতটুকু সম্ভব সামনের দিকে নামান। দুই হাত দিয়ে এ সময় ডান পায়ের গোড়ালি চেপে ধরতে এবং নাক ও কপাল হাঁটুতে লাগাতে চেষ্টা করুন। নিঃশ্বাস-প্রশ্বাস স্বাভাবিক রেখে এ অবস্থায় কমপক্ষে ১০ সেকেন্ড স্থির থাকুন। এবার নিঃশ্বাস নিতে নিতে ধীরে ধীরে আগের মতো সোজা ওপরে উঠে পড়ুন। দুই হাত শরীরের দুই পাশ দিয়ে নিঃশ্বাস ছাড়তে ছাড়তে ধীরে ধীরে নামিয়ে আনুন। এবার বাঁ পা সোজা করে ফেলুন। একইভাবে বিপরীত দিকে করুন। এবার শবাসনে বিশ্রাম নিন। এভাবে পরপর তিনবার করুন।
নওক-আসন
চিত হয়ে শুয়ে পড়ুন। দুই পা জোড়া করে দুই হাত শরীরের সঙ্গে লাগান। নিঃশ্বাস ছাড়তে ছাড়তে কোমর মাটিতে রেখে শরীরের বাকি অংশ (ছবির মতো) তুলে ফেলুন। নিঃশ্বাস স্বাভাবিক রেখে এ অবস্থায় কমপক্ষে ১০ সেকেন্ড অবস্থান করুন। এবার নিঃশ্বাস নিতে নিতে ধীরে ধীরে নেমে যান। শবাসনে বিশ্রাম নিন। একইভাবে তিনবার করুন।
মনে রাখবেন
ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে আপনাকে একটি সুশৃঙ্খল জীবনধারা পরিচালনা করতে হবে। সঠিক ঘুম, কাজ, খাবার, ব্যায়াম, প্রিয়জনের সঙ্গে আড্ডা, কায়িক পরিশ্রম—সবকিছুতে যেন থাকে শৃঙ্খলা। খাবারের ক্ষেত্রে অবশ্যই উপযুক্ত ও পরিমিত খাদ্য ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে আপনাকে একটি সুশৃঙ্খল জীবনধারা পরিচালনা করতে হবে। সঠিক ঘুম, কাজ, খাবার, ব্যায়াম, প্রিয়জনের সঙ্গে আড্ডা, কায়িক পরিশ্রম—সবকিছুতে যেন থাকে শৃঙ্খলা। খাবারের ক্ষেত্রে অবশ্যই উপযুক্ত ও পরিমিত খাদ্য গ্রহণ করাও জরুরি। আর জীবনের অহেতুক জটিলতা পরিহার করুন।
লক্ষ করুন
নিয়মিত ব্যায়াম করুন
প্রতিদিন সকাল বা বিকেলে ৩০ মিনিট সময় ব্যায়ামের জন্য রেখে দিন।
কোনো কিছু খাওয়ার পর অর্থাৎ ভরা পেটে কখনোই যোগব্যায়ামের চর্চা করবেন না।
ব্যায়ামের সময় খুব আঁটসাঁট বা খুব ঢিলেঢালা পোশাক পরিহার করুন। আরামদায়ক পোশাক বেছে নিন।
যেকোনো ব্যায়াম শুরু করার আগে আপনার শারীরিক কোনো ত্রুটি বা অসুখ থাকলে অবশ্যই চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করে নিন।
মডেল: ফারিয়া ছবি: নকশা কৃতজ্ঞতা: বাংলাদেশ ইয়োগা অ্যাসোসিয়েশন
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
:-?
আপনার একটি মতামত বা মন্তব্য আমাদের মত লেখকদেরকে ভালো কিছু লিখার অনুপ্রেরোনা যোগাই।তাই প্রতিটি পোস্ট পড়ার পর নিজের মতামত বা মন্তব্য জানাতে ভুলবেন না।তবে এমন কোন মতামত বা মন্তব্য করবেন না যাতে আমাদের মত লেখকদের মনে আঘাত করে !!