। ১১ । আসন: বজ্রাসন

(১) বজ্রাসন (Vajrasana)

যোগশান্ত্র অনুযায়ী আসনটি অভ্যাসে দেহের নিম্নাংশ বজ্রের মতো দৃঢ় হয়, তাই এ আসনের নাম বজ্রাসন ।

পদ্ধতি:
হাঁটু ভেঙে পা দু’টো পেছনদিকে মুড়ে শিরদাঁড়া সোজা করে বসুন। হাতের চেটো উপুড় করে দু’ জানুর উপর রাখুন। পাছা গোড়ালির উপর থাকবে। শ্বাস-প্রশ্বাস স্বাভাবিক থাকবে। সহজভাবে যতক্ষণ পারা যায় ঐ অবস্থায় বসুন। প্রথম দু’একদিন একটু অসুবিধা হলেও পরে ঠিক হয়ে যাবে। একবারে বেশিক্ষণ না পারলে আসনটি ২/৩ বার করুন। এরপর প্রয়োজনমতো শবাসনে বিশ্রাম নিন।



উপকারিতা:
পরিপূর্ণ আহারের পর এই আসন কিছুক্ষণ অভ্যাস করলে খাদ্যবস্তু সহজে হজম হয় এবং হজমশক্তি বৃদ্ধি পায়। অনেকের মতে বজ্রাসনে বসে চুল আঁচড়ালে সহজে চুল পাকে না বা পড়ে না। এই আসন অভ্যাসে পায়ের পেশী ও স্নায়ুজাল সতেজ ও সক্রিয় থাকে। তাছাড়া, যাদের উপরাংশের তুলনায় নিম্নাংশ সরু বা অপরিণত, আসনটি তাদের অবশ্য করা উচিৎ। দেহের নিম্নাংশ সুগঠিত করতে এ আসন অতুলনীয়।


(২) সুপ্ত-বজ্রাসন (Supta-Vajrasana)

পদ্ধতি:
প্রথমে বজ্রাসনের ভঙ্গিমায় বসুন। এবার পা, হাঁটু ও পাছা ঐ অবস্থায় রেখে আস্তে আস্তে চিৎ হয়ে শুয়ে পড়ুন। অসুবিধা বোধ করলে পায়ের গোড়ালি দু’পাশে একটু হেলিয়ে নিতে পারেন। এবার হাত দু’টো মাথার পেছনে বা মাথার নিচে মেঝেতে রেখে ডান হাত দিয়ে বাঁ কনুই এবং বাঁ হাত দিয়ে ডান কনুই ধরুন। এখন পিঠ মাটি থেকে একটু উপরে তুলুন। শ্বাস-প্রশ্বাস স্বাভাবিক থাকবে। ঐ অবস্থায় ২০ সেঃ থেকে ৩০ সেঃ থাকুন। অতঃপর আস্তে আস্তে পাছার নিচ থেকে মোড়ানো পা খুলে সোজা করে দিন এবং হাত দু’টো শরীরের দু’পাশে রেখে শবাসনে বিশ্রাম নিন। এভাবে ২/৩ বার আসনটি করুন।


উপকারিতা:
এই আসনে মেরুদণ্ডের হাড়ের জোড়া নমনীয় হয়। হাত, পা, পেট, পিঠ, বুক, কোমর ও নিতম্বের পেশী ও স্নায়ুজাল সতেজ ও সক্রিয় হয় এবং বুক সুগঠিত হয়। সহজে পেটের কোন রোগও হতে পারে না। আসনটি অভ্যাস রাখলে বাত বা সায়টিকা হতে পারে না, আর থাকলেও অল্পদিনে ভালো হয়ে যায়।


(৩) লঘু-বজ্রাসন (Laghu-Vajrasana)

পদ্ধতি:
প্রথমে সুপ্ত-বজ্রাসনের ভঙ্গিতে চিৎ হয়ে শুয়ে পড়ুন। এবার হাত দুটোকে মাথার দুপাশ দিয়ে সমান্তরালভাবে লম্বা করে তালু চিৎ করা অবস্থায় মেঝেতে রাখুন। এখন কনুই থেকে হাত দু’টো ভাঁজ করে মাথার দু’পাশে হাতের চেটো মাটিতে স্থাপন করে তার উপর ভর করে শরীরের উর্ধ্বাংশ উপরের দিকে তোলা দিন এবং মেরুদণ্ড বাঁকিয়ে মাথার তালু আস্তে আস্তে নামিয়ে আনুন। শ্বাস-প্রশ্বাস স্বাভাবিক থাকবে। ২০ সেঃ থেকে ৩০ সেঃ এ অবস্থায় থাকুন। তারপর আবার হাতের চেটোর উপর ভর করে শরীরটাকে উপরের দিকে তুলে ধীরে ধীরে সুপ্ত-বজ্রাসনের ভঙ্গিমায় গিয়ে অতঃপর পায়ের ভাঁজ খুলে হাত দু'টোকে শরীরের দু'পাশে রেখে প্রয়োজনমতো শবাসনে বিশ্রাম নিন।


উপকারিতা:
সুপ্ত-বজ্রাসনের সব গুণ এখানে বর্তমান। এ আসনে দেহের সব অংশের ব্যায়াম হয়। বিশেষভাবে ঘাড়, গলা, বুক, পেট, তলপেট ও মেরুদণ্ডের খুব ভালো কাজ হয়। মেরুদণ্ডের নমনীয়তা বৃদ্ধির পাশাপাশি শরীরের অতিরিক্ত মেদ-চর্বি দুর করে শরীরকে চমৎকার সুগঠিত করে।
Share this article :

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

:-?

আপনার একটি মতামত বা মন্তব্য আমাদের মত লেখকদেরকে ভালো কিছু লিখার অনুপ্রেরোনা যোগাই।তাই প্রতিটি পোস্ট পড়ার পর নিজের মতামত বা মন্তব্য জানাতে ভুলবেন না।তবে এমন কোন মতামত বা মন্তব্য করবেন না যাতে আমাদের মত লেখকদের মনে আঘাত করে !!

 
Helped By : WWW.KASPERWINDOW.TK | KasperWindowTemplate | Download This Template
Copyright © 2011. আমার কথা ঘর - All Rights Reserved
Template Created by Aehtasham Aumee Published by KasperWindow
Proudly powered by Blogger