ডায়াবেটিস হলে কি করবেন...........




আজকের দিনে ডায়াবেটিস একটি সুপরিচিত সাধারণ অসুখ। এই রোগটি শরীরের এমন একটি বিশেষ অবস্থা, যে অবস্থায় মানুষের দেহে রক্তে গ্লুকোজের পরিমান স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি থাকে। কিন্তু দেহ কোষগুলো এই অতিরিক্ত গ্লুকোজকে ব্যবহার করতে পারে না। এই অসুখটি হয় প্রধানত ‘ইনসুলিন’ নামে এক রাসায়নিক পদার্থের অভাবের জন্য। কিভাবে বুঝবেন আপনার ডায়াবেটিস হয়েছে?

ডায়াবেটিস রোগের সম্ভাবনা আছে, এরূপ সন্দেহজনক লক্ষণগুলো হলঃ

অস্বাভাবিক বেশি মাত্রায় তৃষ্ণা
অস্বাভাবিক বেশি মাত্রায় ক্ষুধা
বার বার প্রস্রাব করা, বিশেষত রাতে।
ক্লান্তি ও ওজন হ্রাস
ক্ষতস্থান দেরিতে শুকানো
চোখের দৃষ্টিশক্তি কমে যাওয়া
পায়ে অসাড় অনুভূতি
চামড়ায় শুষ্কতা বা চুলকানি ভাব আসা
এক্ষেত্রে দু ধরনের বিশেষ রক্ত পরীক্ষা এই রোগ নির্নয়ে করা হয়- প্রথমটি খালি পেটে এবং দ্বিতীয়টি খাদ্য গ্রহণের পর। এছাড়াও আরও কিছু পরীক্ষা করতে হয় যেমন- ব্লাড সুগার পরীক্ষা, ইউরিন পরীক্ষা, গ্লুকোজ টলারেন্স পরীক্ষা ইত্যাদি।

ডায়াবেটিস রোগের শতকরা ষাট ভাগকে আয়ত্তে রাখা যায় খাদ্যের তালিকায় পরিবর্তন ঘটিয়ে। ডায়াবেটিস রোগীদের হৃদরোগ হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে তাই চর্বি জাতীয় খাবার যহাসম্ভব বর্জন করা উচিত। ডায়াবেটিসে আক্রান্ত রোগীর একবারে বেশি খাবার না খেয়ে সারা দিনে অল্প অল্প খাবার খাওয়া উচিত। এতে করে রক্তে গ্লুকোজের পরিমাণ সহজেই নিয়ন্ত্রণ করা যায়।

ডায়াবেটিস রোগীরা চিনি, মধু, আখের গুঁড় মোটকথা মিষ্টি জাতীয় কোন খাবার খেতে পারবেন না। তবে ডায়াবেটিস আক্রান্ত ব্যাক্তি ইকোয়াল বা স্যাকারিন দ্বারা তৈরি যে কোন মিষ্টি খেতে পারেন। এগুলো দেখলে বা খেলে মনে হবে এতে গ্লুকোজ বা চিনি আছে কারণ এগুলো দিয়ে তৈরি খাবার খেতে মিষ্টি হয়। কিন্তু প্রকৃত পক্ষে এগুলোতে কোন গ্লুকোজ বা চিনি থাকে না।

সমস্ত প্রকার বায়ুযুক্ত পানীয় যেমন পেপসি, কোক, সেভেন আপ প্রভৃত পানীয়তে প্রচুর পরিমাণে চিনি থাকায় ক্যালোরি সমৃদ্ধ হয় তাই এগুলো পান করা ডায়েবেটিস রোগীদের উচিত নয়। তবে ডায়েট কোক বা পেপসি খাওয়া যেতে পারে, এগুলোতে কোন ক্যালোরি থাকে না।

ডায়াবেটিস রোগীরা বেশি করে সালাদ খেলে ভালো। ভাতের সাথে বা অন্য যে কোন খাবার খাওয়ার সময় সালাদ খেলে খুব উপকার হয়। রসুনের মধ্যে রোগ আরোগ্যকর গুণ আছে। রসুন রক্তের মধ্যে শর্করার স্তর এবং কোলেস্ট্রলের স্তরকে কমাতে সাহায্য করে। তাই ভোর বেলা রসুনের সাথে লবঙ্গ খাওয়া ডায়াবেটিস রোগীদের পক্ষে খুবই ভালো।

ডায়াবেটিস রোগ একবারে কখনো সারে না। তবে এটা নিয়ন্ত্রণে রাখা যায় সহজেই। এই রোগকে আয়ত্তে আনা যায় খাদ্য নিয়ন্ত্রণ, ব্যায়াম, মানসিকচাপ দমন ইত্যাদি ব্যাপারে সচেতন হয়ে। নিয়মিত ব্যায়াম বা হাঁটার অভ্যাস খুব দরকারী এই রোগে। প্রতিদিন অন্তত আধঘণ্টা বা একঘন্টা নিয়ম করে হাঁটতে হবে তাহলে ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকবে এবং রক্তে শর্করার পরিমাণও কমে যাবে।

এমনিতে এটা তেমন কঠিন কোন রোগ না। নিয়ম মেনে চললে আপনিও আর দশটা সাধারণ মানুষের মতোই সুস্থ-স্বাভাবিক একজন। তাই বলে এই রোগ হলে হেলাফেলা করা যাবেনা মোটেও, কঠিন নিয়মের মধ্যে থাকলেই এই রোগ কিছুটা নিয়ন্ত্রণে থাকতে পারে।

(হেলথ বার্তা)
Share this article :

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

:-?

আপনার একটি মতামত বা মন্তব্য আমাদের মত লেখকদেরকে ভালো কিছু লিখার অনুপ্রেরোনা যোগাই।তাই প্রতিটি পোস্ট পড়ার পর নিজের মতামত বা মন্তব্য জানাতে ভুলবেন না।তবে এমন কোন মতামত বা মন্তব্য করবেন না যাতে আমাদের মত লেখকদের মনে আঘাত করে !!

 
Helped By : WWW.KASPERWINDOW.TK | KasperWindowTemplate | Download This Template
Copyright © 2011. আমার কথা ঘর - All Rights Reserved
Template Created by Aehtasham Aumee Published by KasperWindow
Proudly powered by Blogger