যখন বিয়ে করছেন দ্বিতীয় বার...

বিয়ে মানুষের জীবনের অন্যতম সত্যিগুলোর মধ্যে একটি। জীবনের নিয়মের মানুষকে বিয়ে করতে হয়। সংসার, আপনজন, সন্তান-সন্ততিদের নিয়েই জীবন কাটে মানুষের। আপাতভাবে বিয়ে বিষয়টি জীবনে একবার হলেও কারো কারো জীবনে তা ঘটে একাধিক বার। দ্বিতীয় বিয়ের কারণ হতে পারে ডিভোর্স, বিধবা বা বিপত্নীক হওয়া।

দ্বিতীয়বার বিয়েটা ঠিক প্রথমবারের মতো হয় না। দ্বিতীয়বারে অনেক ভেবে-চিন্তে পদক্ষেপ গ্রহণ করেন সবাই। দ্বিতীয় সংসারটাও ঠিক আগের মতো হয় না। এখানে হতে হয় ধীর-স্থির ও কৌশলী। নয়তো মুখোমুখি হতে হয় নানা রকম সমস্যার। নিজেকে শুধরে নিয়ে যথাযথভাবে সংসার করাটাই এখানে সফলতা হিসেবে গণ্য হয়। তাই দ্বিতীয়বার বিয়েতে সংসারের ক্ষেত্রে মেনে চলুন কিছু ব্যাপার।

নিজেকে নমনীয় ও সহনশীল করুন আরো :
 স্বামী বা স্ত্রী, সংসার ও শ্বশুরবাড়ির লোকদের প্রতি নমনীয় ও সহনশীল হোন। যেকোনো কাজ করার আগে বা সিদ্ধান্ত নেয়ার আগে ভালোভাবে চিন্তা করুন। আপনার আচার-কথাবার্তা যেন কোনোভাবেই কারো ওপর নেতিবাচক প্রভাব না ফেলে, সেদিকে খেয়াল রাখুন। বিশেষ করে আপনি যদি তালাকপ্রাপ্ত হন, তাহলে বেশি সতর্ক থাকুন। নয়তো সামান্য ভুলভ্রান্তিতেই আপনাকে কটু কথা শুনতে হতে পারে। আর তাছাড়া দ্বিতীয় বিয়েটাও যদি ভেঙে যায়, লোকজন দোষারোপ করবে আপনাকেই।

পুরনো শ্বশুরবাড়ির সাথে যোগাযোগ বন্ধ করুন :
আপনি পুরুষ হন বা নারী, পুরনো শ্বশুরবাড়ির লোকজনদের সাথে আপনার যোগাযোগ বা সুসম্পর্ক বর্তমান সংসারে প্রভাব ফেলবেই। তাই এ ব্যাপারে সতর্ক হওয়াটা অবশ্যই জরুরি। যদি পুরনো শ্বশুরবাড়ির সাথে যোগাযোগ থেকেই থাকে, তাহলে ধীরে ধীরে তা কমিয়ে দিন এবং এক পর্যায়ে বন্ধ করে দিন। কারণ পুরনো সম্পর্ক যদি নতুন সম্পর্কে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে, তা মোটেও ঠিক হবে না।

সন্তানদের মানসিকভাবে প্রস্তুত করুন :
আপনার আগের বিয়েতে যদি সন্তান থাকে তাহলে দ্বিতীয়বার বিয়ের আগেই তাদের মানসিকভাবে প্রস্তুত করা শুরু করুন এ ব্যাপারে। নতুন পরিবার বা নতুন মা অথবা বাবা সম্পর্কে তাদের ইতিবাচক ধারণা দিন। সম্ভব হলে যার সাথে আপনার বিয়ের কথা চলছে তার সাথে সন্তানের পরিচয় করিয়ে দিন এবং তাদের একসাথে সময় কাটাবার সুযোগ করে দিন। এতে তারা একে অপরকে বুঝতে পারবে এবং তা শেষ পর্যন্ত আপনার জন্যই সুবিধাজনক হবে।

অতীতের স্মৃতি নিয়ে বেশি ভাববেন না :
দ্বিতীয় বিয়ের পর বারবার অতীতের স্মৃতিচারণ করবেন না। আপনার আগের স্বামী বা স্ত্রীর প্রসঙ্গ খুব বেশি তুলবেন না। বিশেষ করে আপনার নতুন সঙ্গী বা সঙ্গিনীর সামনে নয়-ই! এতে তার মনে হতে পারে যে আপনি তাকে নিয়ে সুখী নন। এমনকি এটাও মনে হতে পারে যে আপনি আগের জনকেই বেশি প্রাধান্য দিচ্ছেন। এসব ব্যাপার সংসারে সৃষ্টি করতে পারে অশান্তি। তাছাড়া বারবার পুরনো স্মৃতি রোমন্থন করলে তুলনার ব্যাপারটাও চলে আসে। এ ব্যাপারটা খুবই খারাপ।

আগের স্বামী বা স্ত্রী সম্পর্কে কটু কথা বলবেন না :
ডিভোর্সের ক্ষেত্রে আগের স্বামী বা স্ত্রী সম্পর্কে মনে নেতিবাচক ধ্যান-ধারণা থাকবে এটাই স্বাভাবিক। তাই বলে আপনি বর্তমান স্বামী বা স্ত্রীর সামনে তার সম্পর্কে বিষোদগার করবেন, তা মোটেও ঠিক নয়! বরং এটা আপনার স্বভাবের একটা কালো দিক হিসেবে চিহ্নিত হব। আপনার নতুন সঙ্গী বা সঙ্গিনীর মনে আপনার সম্পর্কে একটা নেতিবাচক ধারণার জন্ম দেবে। আপনার নতুন সংসারে এর পরিণাম হতে পারে ভয়াবহ। তাই আগের স্বামী বা স্ত্রী, সংসার, শ্বশুরবাড়ি সম্পর্কে নেতিবাচক কথা বলা থেকে বিরত থাকুন।

সন্তান নেয়ার চেষ্টা করুন :
আগের বিয়েতে আপনার সন্তান থাকতেও পারে বা নাও থাকতে পারে। যেটাই হোক না কেন, যদি সম্ভব হয় তাহলে নতুন সংসারে সন্তান নেয়ার চেষ্টা করুন। এতে আপনাদের দুজনের সম্পর্ক আরো মজবুত হবে। এতে যেমন শারীরিক সম্পর্কের অস্বস্তি কেটে যাবে, তেমনি দূর হবে মানসিক দূরত্বও। আর তাছাড়া সংসারে নতুন অতিথি আসলে নতুন করে জীবন শুরু করার ব্যাপারটির নতুন দিক উন্মোচিত হবে।
Share this article :
 
Helped By : WWW.KASPERWINDOW.TK | KasperWindowTemplate | Download This Template
Copyright © 2011. আমার কথা ঘর - All Rights Reserved
Template Created by Aehtasham Aumee Published by KasperWindow
Proudly powered by Blogger