যোগব্যায়াম করার নিয়ম


শুরু করুন উজ্জীবন দিয়ে

যোগব্যায়াম জ্ঞানীদের ব্যায়াম। দেহমন চাঙা করতে এ ব্যায়ামের কোন বিকল্প নেই। আজ থেকে ৫ হাজার বছর আগে দ্রাবিড় সভ্যতায় এ ব্যায়ামের উদ্ভব ঘটে। দ্রাবিড় সাধকরা যোগব্যায়ামকে তাঁদের দৈনন্দিন জীবনের অভ্যাস ও সংস্কৃতির অঙ্গে পরিণত করেন। বর্বর আর্যদের আক্রমণে মহেঞ্জোদারো, হরপ্পাসহ দ্রাবিড় সভ্যতার কেন্দ্রসমূহ সম্পূর্ণ ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়। দ্রাবিড় সভ্যতাকে নিশ্চিহ্ন করলেও দ্রাবিড়দের যোগব্যায়াম সম্পর্কিত জ্ঞান আর্যরা গ্রহণ করে। পরে আর্যরা এই চমৎকার সার্বজনীন ব্যায়াম পদ্ধতির সাথে নিজস্ব কিছু ধর্মবিশ্বাস যোগ করে এক বিশেষ সম্প্রদায়ের মধ্যে এর চর্চাকে সীমিত করে ফেলে। বিশ্বের সবচেয়ে উৎকৃষ্ট ও কার্যকর ব্যায়াম পদ্ধতি মূলত বন্দী হয়ে পড়ে কিছু কিছু আশ্রমের চৌহদ্দির মধ্যে।
দ্রাবিড় নগরসভ্যতায় যে ব্যায়াম ছিলো সার্বজনীন, তা আবার তার নিজস্ব মহিমায় ভাস্বর হয়ে ওঠে বিংশ শতাব্দীতে এসে। বিশেষ সামপ্রদায়িক বিশ্বাসের চৌহদ্দি ছিন্ন করে এটি এখন আধুনিক মানুষের দেহ-মন সুস্থ রাখার আন্দোলনে রূপ নিয়েছে। তাই স্বাস্থ্যসচেতন পাশ্চাত্যে এখন অ্যারোবিক ক্রেজে ভাটা পড়ে শুরু হয়েছে যোগব্যায়াম চর্চা। আপনিও দেহ-মনকে সুস্থ সবল ও চাঙ্গা রাখার জন্যে শুরু করতে পারেন যোগব্যায়াম।
যোগব্যায়াম শুরু করলে প্রথমেই শরীরটাকে উজ্জীবিত করা বা ওয়ার্ম-আপ করে নেয়া ভালো। দেহকে একটু উজ্জীবিত করে নিলে দেহ নমনীয় হবে এবং পরবর্তী যোগাসনগুলো করা সহজ হবে। ১৫টি ধাপে বিভক্ত এই অনুশীলনীর মাধ্যমে আপনার পেশী ও হাড়ের জয়েন্টের জড়তা কেটে যাবে এবং আপনার শরীর ব্যায়াম ও যোগাসনের জন্যে প্রস্তুত অবস্থায় চলে আসবে। যে কোনো ব্যায়ামের আগেই একটু ওয়ার্ম-আপ (Warm-up) প্রয়োজন। এই ১৫ ধাপের অনুশীলন শরীরকে চমৎকার ভাবে ওয়ার্ম-আপ করে বলেই একে 'উজ্জীবন' বলা হয়। এই অনুশীলনকালে দম স্বাভাবিক থাকবে।

উজ্জীবনের ১৫ ধাপ

প্রস্তুতি : দুইপায়ের মাঝখানে ৪ আঙুল ফাঁক রেখে দুহহাত শরীরের দুহপাশে রেখে বুক টান করে সোজা হয়ে দাঁড়ান।

উজ্জীবনের ১৫ ধাপ

(১)

 
১. বুক টান করে সোজা দাঁড়ানো অবস্থায় দুহহাত সোজা উপরে তুলুন। খেয়াল রাখুন আপনার শরীরের ওজন যেন দুহপায়ের ওপর সমানভাবে পড়ে। কোনদিকে কাত হবেন না বা কোন পায়ে ভর বেশি দেবেন না।

                                                                                (২)
 
২. ধীরে ধীরে হাত ও মাথা পেছনদিকে নিতে থাকুন। কোমর থেকে মেরুদণ্ড পেছনদিকে বেঁকে যাবে। হাঁটু ভাঙবে না। পা সোজা থাকবে। ঘাড় থাকবে শিথিল। যতদূর সম্ভব শরীরকে পেছনের দিকে বাঁকিয়ে দিন।

                                                                      (৩) 
৩. পুরো সামনের দিকে ঝুঁকে পড়ুন। কপাল যতদূর সম্ভব হাঁটুর কাছাকাছি নিয়ে আসুন। হাতের আঙুল মেঝে স্পর্শ করবে।

                                                                  (৪) 
৪.হাঁটু ভেঙে কোমর ও মাথা মাটির সমান্তরালে নিয়ে আসুন। হাতের আঙুল ও করতল এবার সুন্দরভাবে মেঝে স্পর্শ করবে।

                                                                  (৫) 
৫. দুহহাতের ওপর ভর দিয়ে প্রথমে ডান পা পেছনদিকে নিন।

                                                          (৬) 
৬. বাম পা-ও পেছনদিকে নিন। সমস্ত শরীরের ওজন হাত ও পায়ের আঙুলের ওপর পড়বে। মাথা ও কোমর মেঝের সমান্তরাল থাকবে।

                                                            (৭) 
৭. পা ও ঊরু মাটির সাথে লেগে থাকবে। কোমর থেকে মেরুদণ্ড বাঁকিয়ে হাতে ভর দিয়ে মাথা যতদূর সম্ভব পেছনের দিকে নিয়ে যান।

                                                                 (৮) 
৮. সমস্ত শরীর মেঝেতে লাগিয়ে দিন। পা, হাঁটু, পেট, বুক, কপাল সব মেঝেতে লেগে যাবে, হাতদুটো থাকবে মাথার দুহপাশে।

                                                              (৯) 
৯. হাতের ওপর ভর দিয়ে আবার মেরুদণ্ড বাঁকিয়ে মাথা পেছন দিকে হেলিয়ে দিন। হাঁটু জোড়া লেগে থাকবে। (৭নং অবস্থানের মত।)

                                                          (১০) 
 ১০. আগের মত দুহহাত ও দুহপায়ের আঙুলের ওপর ভর দিয়ে কোমর ও মাথা মাটির সমান্তরাল রাখুন। (৬নং অবস্থানের মত।)

                                                             (১১)
১১. প্রথম ডান পা হাতের সামনে আনুন। অন্য পায়ের পাতা পেছনে মাটিতে লাগানো থাকবে।

                                                             (১২) 
১২. হাঁটু ভাঙা অবস্থায় দুহহাতের পাশে দুহপা রাখুন। কোমর ও মাথা মেঝের সমান্তরাল থাকবে। (৪নং অবস্থানের মত।)

                                                            (১৩)
১৩. দুহপায়ের ওপর ওজন রেখে হাঁটু সোজা করুন। কপাল হাঁটুর কাছাকাছি থাকবে। হাতের আঙুল মাটি স্পর্শ করবে। (৩নং অবস্থানের মত।)

                                                              (১৪)
 ১৪. হাঁটুর কাছ থেকে মাথা উঠিয়ে মেরুদণ্ড বাঁকিয়ে একেবারে পেছনদিকে মাথা হেলিয়ে দিন। হাতদুটো মাথার পেছনে থাকবে। (২নং অবস্থানের মত।)

                                                               (১৫)  

১৫. এবার বুক টান করে হাত সোজা উপরের দিকে আনুন। (১নং অবস্থানের মত।)

১৫টি ধাপ সম্পন্ন করার মধ্য দিয়ে আপনি উজ্জীবনের ১ রাউন্ড সম্পন্ন করলেন। ১৫টি ধাপের এটি একটি চমৎকার ব্যায়াম। পূর্ববর্তী ধাপের বিপরীত অবস্থান হচ্ছে পরবর্তী ধাপ। বিভিন্নভাবে শরীর ও পেশীর সঙ্কোচন ও প্রসারণ হয় এর মধ্য দিয়ে। মেরুদণ্ড, ঘাড়, হাত-পায়ের জয়েন্ট, কোমর সবকিছুর ব্যায়াম এতে একসাথে হয়। শুরুতে ৫ রাউন্ড করে করবেন। ক্রমান্বয়ে আপনি ১৫ রাউন্ড পর্যন্ত করতে পারেন। যোগাসন শুরুর আগে উজ্জীবন করে নিলে অন্য আসনগুলো বেশ সহজ হবে আপনার জন্যে। উজ্জীবন অনুশীলন করলে দম সবসময় স্বাভাবিক রাখবেন।

যোগব্যায়াম : শেষ করুন শিথিলায়ন দিয়ে

যোগব্যায়াম শুরু করবেন উজ্জীবন দিয়ে। আর তা শেষ হবে শিথিলয়ান দিয়ে। উজ্জীবনের মধ্য দিয়ে শরীরের অঙ্গপ্রত্যঙ্গ ও পেশীতে রক্ত চলাচল বৃদ্ধি পায়। দেহকোষগুলো সজীব-সক্রিয় হয়ে উঠে। দেহের বিপাক ক্রিয়া দ্রুততর হয়। দেহের সবকিছুই সক্রিয় হয়ে ওঠে। আর শিথিলায়নে দেহের প্রতিটি অঙ্গ ও পেশী পুরোপুরি বিশ্রাম লাভ করে।
উজ্জীবন শারীরিক কার্যক্রমকে সক্রিয় করে। আর শিথিলায়ন করে নিষ্ক্রিয়। সক্রিয়তা ও নিষ্ক্রিয়তার মাঝে একটি ছন্দ সৃষ্টি হলে প্রাণশক্তি বৃদ্ধি পায়। তাই ব্যায়ামের মাধ্যমে পেশী ও অঙ্গকে সক্রিয় করে তোলার পর শিথিলায়নের মাধ্যমে পেশী ও অঙ্গকে পুরোপুরি নিষ্ক্রিয় করলেই আপনি ব্যায়ামের সুফল পুরোপুরি ভোগ করতে পারবেন। ব্যায়ামের পর শিথিলায়ন করলেই আপনি নতুন প্রাণশক্তিতে পরিপূর্ণ হয়ে উঠবেন। নতুন উদ্যমে আপনি আপনার কাজ শুরু করতে পারবেন।

শিথিলায়ন প্রক্রিয়া

শিথিলায়ন খুবই সহজ। ধাপে ধাপে করলে আপনি খুব সহজেই দেহমনকে শিথিল করে নতুন প্রাণশক্তিতে উজ্জীবিত হতে পারবেন। শিথিলায়নে ধাপগুলো নিম্নরূপ :
১. ব্যায়ামের শেষে ব্যায়ামের বিছানার উপর সটান চিৎ হয়ে শুয়ে পড়ুন। দুহহাত শরীরের দুহপাশে রাখুন। হাতের তালু উপরের দিকে থাকবে। দুহপায়ের মাঝে চার আঙুল পরিমাণ ফাঁক থাকবে। মাথাটা ডানদিকে একটুখানি কাত হয়ে থাকবে।
২. এভাবে শুয়ে পড়ার পর চোখ বন্ধ করুন। ধীরে ধীরে লম্বা দম নিন এবং ধীরে ধীরে দম ছাড়ুন। দম নেয়ার সময় ধীরে ধীরে আপনার পেটের উপরিভাগ ফুলবে এবং দম ছাড়ার সাথে সাথে পেটের উপরিভাগ চুপসে যাবে। চোখ বন্ধ করে দম নেয়ার সময় ভাবুন, প্রকৃতি থেকে অফুরন্ত প্রাণশক্তি আপনার শরীরে প্রবেশ করছে আর দম ছাড়ার সময় ভাবুন শরীরের সকল দূষিত ও ক্ষতিকর পদার্থ বাতাসের সাথে বেরিয়ে যাচ্ছে। এভাবে ৫/৭ বার দম নিন, দম ছাড়ুন। দম নাক দিয়ে নেবেন, মুখ দিয়ে ছাড়বেন। মনে করতে থাকুন যে আপনার শরীর নিস্তেজ হয়ে আসছে।
৩. এবার মনের চোখে শরীরের সকল অঙ্গের উপর একবার নজর বুলিয়ে যান। নজর বোলানোর পর প্রথমে মনোযোগ কেন্দ্রীভূত করুন মাথার তালুর পেশীগুলোতে। অনুভব করুন সেখানে রক্ত চলাচল বাড়ছে, একটু গরম-গরম লাগছে, একটু শিরশির করছে। পেশী শিথিল হয়ে যাচ্ছে, পেশী ভারী হয়ে যাচ্ছে। এমনিভাবে আপনি এক এক করে কপাল, চোখ ও চোখের পাতা, চোয়াল, ঠোঁট, জিহ্বা, মুখমণ্ডল, গলা, ঘাড়, কাঁধ, ডানহাত, বামহাত, বুক, পিঠ, গোড়ালি ও পায়ের পাতায় মনোযোগ দিন। মনোযোগ দেয়ার সাথে সাথে অনুভব বা কল্পনা করবেন যে সেখানে রক্ত চলাচল বাড়ছে, একটু গরম-গরম লাগছে বা শিরশির করছে। এরপরেই কল্পনা করবেন যে, পেশী শিথিল হয়ে গেছে, পেশী ভারী হয়ে গেছে। যে অঙ্গগুলোর নাম উল্লেখ করা হলো তার প্রতিটির জায়গায় চার থেকে পাঁচ সেকেন্ড সময় ব্যয় রকুন। কল্পনা করুন যে এই অঙ্গগুলো ভারী হয়ে যাচ্ছে এবং সারা শরীরে শিথিলতা স্রোতের মত উপর থেকে নিচের দিকে প্রবাহিত হচ্ছে। এখানে এসে আপনি কল্পনা করুন যে আপনি যেন বরফের তৈরি। বরফ গলে যেমন নিচের দিকে নামে তেমনি আপনার শরীরের প্রতিটি কোষ শিথিল হয়ে নিচের দিকে চাপ সৃষ্টি করছে।
৪. এবার নাক দিয়ে খুব ধীরে ধীরে দম নিয়ে ধীরে ধীরে দম ছাড়ুন। ৫/৭ বার এরকম দম নিয়ে দম ছাড়ুন। শরীর আরও ভারী লাগতে শুরু করবে।
৫. এবার শুধু দমের দিকে খেয়াল দিন। অনুভব ও অবলোকন করুন বাতাস কিভাবে নাক দিয়ে ফুসফুসে গিয়ে আবার বেরিয়ে আসছে। আপনার দম এমনিতেই ধীর হয়ে গেছে। দমের প্রতি খেয়াল দেয়ার পর আপনার শরীর আরও ভারী লাগতে শুরু করবে। কল্পনা করুন যে আপনার শরীর আরও ভারী হয়ে গেছে।
৬. এবার কল্পনা করুন মাধ্যাকর্ষণ শক্তি আপনার শরীরকে নিচের দিকে টানছে। অনুভব করুন আপনার শরীরের ওজন বেড়ে গেছে। হাত, পা, মাথা, কাঁধ, শরীর সব ভারী হয়ে মেঝের মধ্যে যেন ঢুকে যেতে চাইছে। এবার কল্পনা করুন আপনার অঙ্গগুলো এত ভারী হয়ে গেছে যে সেগুলো আর জৈব পদার্থ নেই, জড় পদার্থে পরিণত হয়েছে। এবার নিজের দেহকোষগুলোকে ভাবুন ও অনুভব করুন বালুকণা হিসেবে।
৭. এবার অনুভব করুন আপনার শরীরের প্রতিটি অঙ্গ থেকে বালুকণাগুলো ঝুরঝুর করে ঝরে পড়ছে। আঙুল, হাত, পা, পিঠ, কাঁধ সব ঝরে ঝরে পড়ে যাচ্ছে। অনুভব ও কল্পনা করুন, আপনার শরীর বলে আর কিছুই নেই। আপনি এক বালুর স্তূপে পরিণত হয়েছেন।
৮. আপনি এখন বালুর স্তূপ। ঠাণ্ডা বাতাস এসে ঝড়ের মত সমস্ত বালুকণাগুলো উড়িয়ে নিয়ে চারদিকে ছড়িয়ে দিচ্ছে। বাতাস বালুকণাগুলোকে উড়িয়ে নিয়ে যাওয়ায় এবার অনুভব করুন, আপনার শরীর বলতে আর কিছুই নেই। আপনার বলতে এখন রয়েছে শুধু আপনার মন, আপনার চেতনা। আপনি এখন পুরোপুরি শিথিল।
৯. দেহের শিথিলতার সাথে সাথে মনের শিথিলতা আনয়নের জন্যে এবার সুন্দর দৃশ্যের কল্পনা করুন। এ দৃশ্য হতে পারে সমুদ্রসৈকত, লেক বা নদীর পাড় বা এমন কোন প্রাকৃতিক দৃশ্য যা আপনাকে আনন্দে আপ্লুত করে তোলে।
১০. এভাবে কিছুক্ষণ সময় অবিবাহিত হতে দিন। শরীর-মন শিথিল হওয়ার সাথে সাথে আশ্চর্য এক প্রশান্তি অনুভব করবেন।
১১. এই নিশ্চল-নিশ্চুপ অবস্থায় ৫/১০ মিনিট সময় অতিবাহিত করুন। লম্বা দম নিয়ে আস্তে আস্তে চোখ মেলুন। আড়মোড়া ভেঙে উঠে বসুন।
এভাবে শিথিলায়নের ফলে শরীরের প্রতিটি পেশী বিশ্রাম পেয়ে নতুন প্রাণশক্তিতে উজ্জীবিত হয়ে উঠবে। দেহমনে পাবেন এক সুন্দর প্রশান্তি। বেশ আরামদায়ক ঘুমের পর শরীর যেমন ঝরঝরে হয়ে ওঠে আপনার শরীরও তেমনি ঝরঝরে হয়ে উঠবে। শান্ত মন ও প্রাণবন্ত দেহে পরবর্তী কাজগুলো করতে পারবেন।

Share this article :

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

:-?

আপনার একটি মতামত বা মন্তব্য আমাদের মত লেখকদেরকে ভালো কিছু লিখার অনুপ্রেরোনা যোগাই।তাই প্রতিটি পোস্ট পড়ার পর নিজের মতামত বা মন্তব্য জানাতে ভুলবেন না।তবে এমন কোন মতামত বা মন্তব্য করবেন না যাতে আমাদের মত লেখকদের মনে আঘাত করে !!

 
Helped By : WWW.KASPERWINDOW.TK | KasperWindowTemplate | Download This Template
Copyright © 2011. আমার কথা ঘর - All Rights Reserved
Template Created by Aehtasham Aumee Published by KasperWindow
Proudly powered by Blogger